সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় কৃষকরা এখন টমেটো চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বিশেষ করে মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে কৃষকরা ভালো ফলন পাচ্ছেন। এতে খরচ কিছুটা বেশি হলেও লাভ হচ্ছে বেশি।উল্লাপাড়া উপজেলার আলিয়ারপুর গ্রামের কৃষক নেজাব আলী মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। তিনি মানব মুক্তি সংস্থা (এমএমএস) থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর নিজ বাড়ির পাশে মাত্র ২৫ শতক জমিতে টমেটো চাষ শুরু করেন। অক্টোবরের শেষে চারা রোপণ করেন। বর্তমানে তার গাছে প্রচুর টমেটো ধরেছে।নেজাব আলী জানান, ইতোমধ্যে তিনি ৮ মণ টমেটো বিক্রি করেছেন। তার মোট খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা। বাজারে টমেটোর দাম কিছুটা কম থাকায় লাভের পরিমাণ কম হবে। তারপরও তিনি আশা করছেন, ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ হবে।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করলে জমির আর্দ্রতা ধরে রাখা যায়। এটি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, রোগজীবাণু প্রতিরোধ করে ও অতিরিক্ত পানি রোধ করে। এ ছাড়া আগাছা হয় না। এতে সারের কার্যকারিতা বাড়ে।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি বলেন, ‘এ অঞ্চলের কৃষিতে বৈচিত্র্য আসছে। টমেটো চাষ করে নেজাব আলীর মতো অনেক কৃষক সফলতা পাচ্ছেন। স্থানীয় চাষিদের মধ্যে টমেটো চাষের আগ্রহ বাড়ছে।’ তিনি জানান, এ বছর উল্লাপাড়ায় মোট ৫১ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ হেক্টর জমিতে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করলে জমিতে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি আর্দ্রতা সংরক্ষিত হয়। এতে ফলনও বাড়ে।কৃষক নেজাব আলী বলেন, ‘মালচিং পদ্ধতি আমার জন্য লাভজনক হয়েছে। আমার সাফল্য দেখে অন্যরাও উৎসাহিত হচ্ছেন।’ স্থানীয় কৃষকরা এখন এ পদ্ধতিতে চাষের পরিকল্পনা করছেন।
মালচিং পদ্ধতিতে চাষ পদ্ধতি সহজ হলেও সঠিক পরিচর্যা দরকার। জমি তৈরি করে সার মিশিয়ে বেড প্রস্তুত করতে হয়। এরপর বেডের ওপর মালচিং পলিথিন বিছিয়ে দিতে হয়। পলিথিনের নিচে পানি যাতে না যায়, সে জন্য চারপাশে মাটিচাপা দিতে হয়। প্রতিটি চারা ১৮ ইঞ্চি দূরত্বে লাগাতে হয়।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টমেটো পুষ্টিগুণে ভরপুর। এটি পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে। এ ছাড়া এতে আছে ভিটামিন সি, কেএ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লাইকোপিন। যেটা নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।