নওগাঁর সদর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে কৃষক রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী বৃষ্টি বানু নতুন জাতের ‘লাউ বেগুন’ চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। দূর থেকে দেখতে লাউয়ের মতো হলেও এটি মূলত বেগুন। নতুন এ জাতের নাম ‘বারি-১২’।জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো নওগাঁয় এ জাতের বেগুন চাষ হয়েছে। প্রতিটি বেগুনের ওজন এক-দেড় কেজি। প্রতিটি গাছে ৭ থেকে ৮ কেজি বেগুন ধরে। এটি প্রচলিত বেগুনের তুলনায় বেশি ওজনে এবং গুণগত মানেও উন্নত। রোগ-বালাই কম হওয়ায় এটি লাভজনক সবজি হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত সপ্তাহে নওগাঁ হাটে দেড় মণ বেগুন নিয়ে গিয়েছিলাম। অনেকেই বিস্মিত হয়েছে। এটা লাউ না বেগুন! অন্য বেগুন যেখানে ৫০০ টাকা মণ, সেখানে আমি ১ হাজার ৬০০ টাকা মণে বিক্রি করেছি।’বৃষ্টি বানু বলেন, ‘কৃষি অফিস থেকে ৬০০টি চারা পেয়েছিলাম। গাছগুলো এখন প্রচুর বেগুন দিচ্ছে। বাজারে নিয়ে বিক্রি করে ভালো লাভ হচ্ছে।’স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বারি-১২ জাতের বেগুন উচ্চফলনশীল ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে প্রচুর আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। যেটা রক্তশূন্যতা দূর করে ও হাড় মজবুত করে। এটি ব্যাকটেরিয়াজনিত ঢলে পড়া রোগ সহনশীলও।’এই বেগুনের চাষ দেখে আশপাশের কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কৃষক রুহুল আমিন ও কেরামত উল্লাহ বলেন, ‘এত বড় বেগুন কখনো দেখিনি। আগামী বছর আমরাও এই বেগুনের চাষ করব।’কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান আরিফ জানান, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) আর্থিক সহায়তায় কৃষকদের এই জাতের বেগুনের চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রতি বিঘায় ৫ থেকে ৭ টন বেগুন উৎপাদিত হতে পারে। কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও বীজ সংরক্ষণের সুযোগ তৈরি করা হলে এটি আরও ব্যাপকভাবে চাষ হবে। ফলে কৃষকরা লাভবান হবেন।