নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার তিনগাঁও এলাকার বাসিন্দা মো. হাসিব। কিছুতেই সফলতা ধরা দিচ্ছিলো না তাকে। সবশেষে এক বন্ধুর পরামর্শে তিনি মাশরুম চাষে মনোনিবেশ করেন। এই মাশরুম চাষেই সফলতা আসে। পরিবারের সদস্যদের নিয়েই মাশরুম চাষ করছেন। বছর শেষে ৭-৮ লাখ টাকা আয় করেন। তার ইচ্ছা, এটিকে শিল্পে রূপান্তর করবেন। মানুষের কর্মসংস্থান গড়ে তুলবেন।এই পথের শুরুটা মসৃণ ছিল না মো. হাসিবের জন্য। নানা প্রতিকূলতার শিকার হতে হয় তাকে। স্বাধীনভাবে কাজ করার মানসিকতা থেকে ড্রাইভিং পেশায় যোগ দিয়েছিলেন। তাতে পরিবারকে সময় দিতে পারছিলেন না। অন্যের অধীনেই থাকতে হতো। এরপর নিজ এলাকায় অটোরিকশা চালানো শুরু করেন। এখানেও তৃপ্তি আসে না। সন্তানরা অটোরিকশা চালক হিসেবে বেড়ে উঠুক, এটি চাননি। স্বাবলম্বী হতে কোয়েল পাখি, হাঁস, কবুতরের খামারও করেন। পরে করেন শাক-সবজি চাষ। তাতেও সফলতা আসেনি।২০২০ সালের শুরুর দিকে এক বন্ধুর পরামর্শে শুরু করেন মাশরুম চাষ। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কঠোর পরিশ্রম ও প্রবল আত্মবিশ্বাস থেকে বছরখানেকের মধ্যেই লাভের মুখ দেখেন। বর্তমানে বড় পরিসরে করছেন মাশরুমের চাষাবাদ। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছেন।
স্ত্রী সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘মাশরুম চাষ খুবই ভালো লাগে। আমার স্বামীর কাছ থেকে শিখেছি। তাকে সহযোগিতা করি। প্রথমে বীজ কিনে মাশরুম চাষ করি। এখন নিজেরাই বীজ উৎপাদন করছি। এই মাশরুম নিজেরাও খাদ্য তালিকায় রেখেছি। অন্যকেও রাখতে উৎসাহিত করছি। এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।’বন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘সাভারের মাশরুম উন্নয়নকেন্দ্র থেকে প্রকল্পের অধীনে একটি প্রশিক্ষণ হয়। হাসিব সাহেবকে ওখানে ১৫ দিনের আবাসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাকে এ পর্যন্ত ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। মাশরুম উৎপাদনের জন্য দুটি ঘর তৈরি করে দিয়েছি। একজন উদ্যোক্তার যা যা প্রয়োজন তা দেওয়া হয়েছে।’