দীর্ঘ ১১ মাস অপেক্ষার পর আবার এলো পবিত্র রমজান। এ মাস রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে আসে। ইসলামে রমজানের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি আত্মসংযম, আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাস। হিজরি দ্বিতীয় সনে রোজা ফরজ করা হয়, তবে রোজার ইতিহাস বহু প্রাচীন এবং অন্যান্য ধর্মেও রোজার প্রচলন ছিল।আল্লাহ তাআলা বলেন, “হে ঈমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের আগের লোকদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকি (খোদাভীরু) হতে পারো।” (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৩)।এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, রোজার মূল উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জন। রোজার মাধ্যমে মানুষ নিজেকে সংযত রাখতে শেখে এবং নৈতিকতা বজায় রাখে। এটি পাপমুক্ত জীবন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
রমজান মাস মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধির শ্রেষ্ঠ সময়। এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত করা হয়, ফরজ-ওয়াজিব পালন করা হয়, এবং তারাবির নামাজ আদায় করা হয়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পাপ থেকে দূরে থাকা।শিশুরা, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিরা রোজার বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত। গর্ভবতী নারী, স্তন্যদানকারী মা এবং অসুস্থ ব্যক্তিরা চাইলে রোজার পরিবর্তে ‘ফিদয়া’ দিতে পারেন। অসুস্থতা সেরে গেলে কাজা রোজা পালন করার সুযোগও রয়েছে।রমজান নির্ধারণের জন্য ইসলাম চন্দ্রপঞ্জিকা অনুসরণ করে। এতে প্রতিবার রমজানের সময় পরিবর্তিত হয় এবং বিভিন্ন ঋতুতে রোজা রাখার সুযোগ মেলে। যদি সৌরবর্ষ অনুসারে রোজা নির্ধারিত হতো, তবে কিছু দেশে রমজান সবসময় গ্রীষ্মে, আর কিছু দেশে সবসময় শীতে থাকত। কিন্তু চন্দ্রপঞ্জিকার কারণে রমজান সব ঋতুতে পালিত হয়, যা মুসলমানদের জন্য এক অনন্য বৈশিষ্ট্য।রমজান শুধুমাত্র উপবাসের মাস নয়, এটি আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য ও সংযমের প্রশিক্ষণের মাস। এ মাসে আমাদের উচিত বেশি বেশি ইবাদত করা, গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা। রমজানের প্রকৃত শিক্ষা সারা বছর ধরে জীবনে বাস্তবায়ন করা উচিত।